আই.পি ক্যামেরা ও সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা এর মধ্যে পার্থক্যসমূহ

বর্তমানে আমরা বসবাস করছি ডিজিটাল বিপ্লবের যুগে। আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি উপাদানে লেগেছে উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া। সকালে ঘুম ভাঙা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা ডিজিটাল যন্ত্রপাতিতে ঘেরা থাকি। ঠিক তেমনি আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাতেও ব্যবহৃত হচ্ছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং নজরদারিতে ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যেটি ব্যবহৃত হয় সেটি হল ক্যামেরা। প্রধানত নিরাপত্তায় ব্যবহৃত ক্যামেরা দুই ধরণের হয়ে থাকে। সেগুলো হল ইন্টারনেট প্রটোকল বা আই.পি ক্যামেরা এবং ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন বা সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা। যে কোন প্রতিষ্ঠান, আবাসিক ভবন অথবা এলাকায় নজরদারি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহজ এবং কার্যকরী করতে এই দুই ধরনের ক্যামেরায় ব্যবহৃত হয়। 

 

আই.পি ক্যামেরা এবং সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা এ দুটিরই রয়েছে কিছু বিশেষ-বিশেষ বৈশিষ্ট্য, সুবিধা, সীমাবদ্ধতা এবং কার্যক্ষমতা। যেগুলো নিরাপত্তার বিধানের ভিন্ন-ভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। আমরা এই আর্টিকেলে আই.পি ক্যামেরা এবং সি.সি.টি.ভি ক্যামেরার মধ্যে পার্থক্যগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, যাতে পাঠক নিজের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ক্যামেরা নির্বাচন করতে পারেন এবং উপকৃত হতে পারেন।

 

সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা এবং আই.পি ক্যামেরা বলতে কী বোঝায়। 

 

সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা। 

 

সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা হচ্ছে এক ধরনের এনালগ ভিডিও ক্যামেরা। এটি প্রধানত নজরদারি এবং নিরাপত্তার কাজে ব্যবহৃত হয়। সর্বপ্রথম ১৯২৭ সালে রাশিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী লিওন থেরেমিন (Léon Theremin) একটি মেকানিক্যাল সি.সি.টি.ভি সিস্টেম তৈরি করেন। এরপর বিভিন্ন ধাপে সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা সিস্টেম উন্নতি লাভ করে। সবশেষে ১৯৪৯ সালে আমেরিকাতে সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হয়। সাধারণ মানুষের ব্যবহারের এই ক্যামেরাটি নাম ছিল ভেরিকন। 

 

সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা সিস্টেমে, সিগন্যাল পাঠানোর জন্য একটি বদ্ধ সার্কিট বা ক্লোজড সার্কিট ব্যবহার করা হয়। এই ক্যামেরা সিস্টেমে কিছু নির্দিষ্ট মনিটর এবং রেকর্ডারে সিগন্যাল পাঠানো হয়। অর্থাৎ ধারনকৃত ভিডিও ফুটেজ, পাবলিক-ব্রডকাস্ট করা হয় না। শুধু সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত এবং অনুমোদিত ব্যবহারকারী বা অথরাইজড ইউজার ফুটেজের এক্সেস পেয়ে থাকেন। সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা সাধারণত রিয়েল-টাইম মনিটরিং এবং রেকর্ডিং এর জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন আবাসিক ভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়।  বিভিন্ন ধরনের CCTV Camera এর কালেকশনগুলো চাইলে দেখে নিতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে। 

 

আই.পি ক্যামেরা।

 

আই.পি ক্যামেরা আবিষ্কারের ইতিহাস খুব বেশি পুরাতন নয়। সুইডেন ভিত্তিক কোম্পানি অ্যাক্সিস কমিউনিকেশন ১৯৯৬ সালে প্রথম আই.পি  ক্যামেরা বাজারে আনে। এরপর থেকে এটি এর সুবিধা জনক ব্যবহারের কারণে, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

 

ইন্টারনেট প্রটোকল বা আই.পি ক্যামেরা মূলত একটি ডিজিটাল ক্যামেরা। আই.পি ক্যামেরা সিগন্যাল আদান-প্রদানের জন্য সি.সি.টি.ভি ক্যামেরার মত আবদ্ধ বা ক্লোজড সার্কিট ব্যবহার করে না। পক্ষান্তরে আই.পি ক্যামেরা সিগন্যাল আদান-প্রদানের জন্য একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে। 

 

আই.পি ক্যামেরাতে হাই রেজুলেশন এর ভিডিও ফুটেজ ধারণ করা সহ আরো বেশ কিছু আধুনিক ফিচার রয়েছে। শুধুমাত্র ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে আই.পি ক্যামেরায় লাইভ অথবা রেকর্ডকৃত ভিডিও মনিটরিং করা সম্ভব। দেখে নিতে পারেন Trimatrik এর IP Camera এর কালেকশন গুলো। 

 

আই.পি ক্যামেরা ও সি.সি.টি.ভি ক্যামেরার মূল পার্থক্যসমুহ

 

এবার আই.পি ক্যামেরা ও সি.সি.টি.ভি ক্যামেরার পার্থক্য গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

Key Differences Between IP Cameras and CCTV Cameras

 

১. ট্রান্সমিশন বা তথ্য আদান-প্রদানের ধরন এবং টেকনোলজিক্যাল বা প্রযুক্তিগত পার্থক্য। 

 

আই.পি ক্যামেরা।

 

 

 

 

সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা। 

 

 

 

 

২. ক্যামেরা ইনস্টল প্রক্রিয়া। 

 

আই.পি ক্যামেরা।

 

 

 

 

সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা।

 

 

 

 

৩. ভিডিও কোয়ালিটি। 

 

আইপি ক্যামেরা 

 

 

 



সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা।

 

 

 

 

৪. দাম এবং মানুষের ক্রয়ক্ষমতা।

 

আই.পি ক্যামেরা।

 

 

 

 

সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা।

 

 

 

 

৫. রিমোট এক্সেস এবং সিস্টেমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। 

 

আই.পি ক্যামেরা।

 

 

 

 

সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা।

 

 

 

 

উপসংহার

 

উপরের আলোচনায় আমরা আই.পি ক্যামেরা এবং সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা সিস্টেমের মধ্যে পার্থক্য সমূহ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তবে ব্যবহারের জন্য ক্যামেরা নির্বাচন মূলত আপনার প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে। 

 

যদি আপনি হাই রেজুলেশন, অত্যাধুনিক ফিচার, রিমোট এক্সেস ইত্যাদি চান তাহলে আই.পি ক্যামেরা হতে পারে আপনার জন্য সঠিক ক্যামেরা সিস্টেম। 

 

পক্ষান্তরে যদি সহজে পরিচালনা করা যায়, সাশ্রয়ী, সাইবার হামলার ঝুঁকি কম এবং ছোট পরিসরে ব্যবহার করা যায় এমন একটি সিস্টেম নিতে চান তাহলে সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ।

 

আশা করি এই আর্টিকেল থেকে পাঠক আই.পি ক্যামেরা ও সি.সি.টি.ভি ক্যামেরা সিস্টেমের মধ্যে পার্থক্যগুলো সহজ ভাবে বুঝতে পারবেন। এধরনের আরও নিরাপত্তা বিষয়ক প্রোডাক্ট গুলো আপনারা পেয়ে যাবেন Trimatrik এর ওয়েবসাইটে।

যদি আরো বিস্তারিত আপনারা জানতে চান কিংবা কোন মতামত আমাদেরকে জানাতে চান, তাহলে কমেন্ট করুন আমাদের পোস্টের নিচে। আপনাদের যেকোন জিজ্ঞাসা অথবা মতামত আমাদের একান্ত কাম্য। কমেন্টে উত্তরের মাধ্যমে আপনাদের জবাব দেওয়া হবে। আর লেখাটি যদি ভালোলেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিন।